Description: শহর বা তীর্থের জাঁকজমক গোলমাল আমার ভালো লাগে না। আমি চিরদিন নির্জ্জন ভালবাসি। তাই পাহাড়, নদী, বন-জঙ্গলে দেখে বেড়াই। বনে-জঙ্গলে ভগবানের সৃষ্টির কি সৌন্দর্য্যই না দেখি। ১৯৪৯ সালের নভেম্বর মাস,—আমি তখন ঘাটশীলায়। ছোটনাগপুরের জঙ্গল দেখবার সাধ হোল। মিস্টার সর্দ্দার সিংও রাজী হলেন। আর দেরি নয়—দুজনে বেলা তিনটার ট্রেনে ঘাটশীলা ছেড়ে চক্রধরপুরে এলুম। রেস্তোরাঁয় চা খেয়ে দুজনে চললুম হরদয়াল সিং-এর বাড়ি—সেখানে রাত্রে খাওয়া-দাওয়া সেরে রেস্তোরাঁতে গিয়ে দুজনের রাত্রিযাপন। সকালে হরদয়াল সিং-এর বাড়ি থেকে এলো ক্ষেত থেকে সদ্য তোলা মূলো—চায়ের সঙ্গে সেই মূলো খেয়ে দুজনে মোটরে করে বেরিয়ে পড়লুম। ভগবানের অসীম দয়া—তাই এমন সব বন্ধু পেয়েচি। না হলে এমন আরামে আমায় জঙ্গলে নিয়ে যেত কে? এলুম চাঁইবাসায়। চাঁইবাসা জায়গাটি বেশ পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর। এখানে একটি হ্রদ আছে। তেমন বড় না হলেও ভারি সুন্দর। উঁচু-নীচু পথ—চমৎকার বাঁধানো। পথের একদিকে পাহাড়ের শ্রেনী, আর একদিকে টানা জঙ্গল। সরকারী ফরেস্ট। এ জঙ্গলে ছোটোখাটো জীবজন্তু আছে। পথে সঞ্জয় নদী। নদীর উপর প্রকাণ্ড পুল। পার হয়ে জঞ্জলের পথে ষোল মাইল আসবার পর শলাই বাংলো। দু-বছর আগে এখানে এসেছিলুম। বাবলুর মা রান্না করে খাইয়েছিলেন। সেকথা মনে পড়লো।