Description: কিন্তু ছুটে আসছ কেন? কেউ তোমাকে লাঠি নিয়ে তাড়া করেছে নাকি? ইজিচেয়ারের হাতলের উপর বসে পড়ে মানিকলাল বললে, হুঃ, আমাকে লাঠি নিয়ে তাড়া করে, এ অঞ্চলে এমন লোক তো কাউকে দেখি না। আমি তাড়াতাড়ি ছুটে আসছি তোমাকে একটা মস্ত খবর দেওয়ার জন্যে। কাল মুকুন্দ নন্দীর গদিতে একটা রহস্যময় চুরি হয়ে গেছে! জয়ন্ত সিধে হয়ে বসে বললে, রহস্যময় চুরি? হুঁ। এই দেখো খবরের কাগজ। তুমি পড়ে শোনাও। মানিকলাল খবরের কাগজ থেকে পড়ে শোনাতে লাগলঃ রহস্যময় চুরি গতকল্য গভীর রজনীতে বাগবাজারের শ্রীযুক্ত মুকুন্দলাল নন্দীর গদিতে এক রহস্যময় চুরি হইয়া গিয়াছে। গদির কার্য শেষ হইয়া যাইবার পর মুকুন্দবাবু যথারীতি হিসাব মিলাইয়া শয়ন করিতে যান। গদিতে সেদিন অনেক টাকার কাজ হইয়াছিল এবং সে টাকা লোহার সিন্দুকের ভিতরে তুলিয়া রাখা হইয়াছিল। সিন্দুকের পাশেই মুকুন্দবাবুর এক কর্মচারী শয়ন করিয়াছিল। গভীর রাত্রে হঠাৎ তাহার নিদ্রাভঙ্গ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে কে তাহাকে ধরিয়া শূন্যে তুলিয়া জানালা দিয়া দ্বিতলের উপর হইতে নিম্নতলে নিক্ষেপ করে। ভাগ্যক্রমে জানালার নিচেই মেদি পাতার ঝোপ ছিল, তাই তাহার উপরে পড়িয়া লোকটি অজ্ঞান হইয়া গেলেও তাহার আঘাত সাংঘাতিক হয় নাই। জ্ঞানেনাদয়ের পর তাহার আর্তনাদে গদির আর সকলকার নিদ্রাভঙ্গ হয়। তাহার মুখ হইতে সমস্ত শুনিয়া মুকুন্দবাবু তখনি লোহার সিন্দুকের ঘরে যান। কিন্তু ঘরের দ্বার ভিতর হইতে বন্ধ ছিল। তখন দ্বার ভাঙিয়া ফেলা হয়। ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া সকলে দেখেন যে, লোহার সিন্দুকের দরজা ভাঙা, ভিতরে টাকাকড়ি কিছুই নাই। একটা জানলার চারিটা লোহার শিক দুমড়াইয়া কে বা কাহারা খুলিয়া ফেলিয়াছিল,–শিকগুলি বাড়ির বাহিরে জানালার ঠিক নীচেই পাওয়া গিয়াছে। চোরেরা যে এই ভাঙা জানালা দিয়াই ভিতরে ঢুকিয়া আবার বাহির হইয়া গিয়াছে, সে বিষয়ে কোনওই সন্দেহ নাই। মুকুন্দবাবুর প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা সিন্দুক হইতে অদৃশ্য হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ। পুলিশ জোর তদন্ত শুরু করিয়াছে।
Golpokhuro App
Listen to Complete Audiobooks